জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: মুহাম্মদ ফখরুল
রাজনীতি
প্রকাশঃ ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১০:০২ অপরাহ্ন
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, দুই হাজার ছাত্র-জনতার শাহাদাতের বিনিময়ে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। সেই দেশে জুলাই সনদের আইনী ভিত্তির জন্য এখনো রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে। যা জুলাই চেতনা ও জুলাই যোদ্ধা শহীদ ও আহতদের রক্তের সাথে প্রতারণার শামিল। জামায়াত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা পূরণে অঙ্গিকারাবদ্ধ। দেশে ফেব্রæয়ারীতেই নির্বাচন হবে। তবে এর আগে জুলাই সনদের আইনী ভিত্তির জন্য নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। একই সাথে জামায়াতের ৫ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। অন্যথায় জনতার চলমান আন্দোলন অগ্নিস্ফুলিংয়ে রূপ নিবে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনী ভিত্তিসহ জামায়াতের ৫ দফা দাবির প্রতি জনগণ এবং সব রাজনৈতিক দল একমত। শুধু একটি দলের কারণে গণভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা সবকিছু পরবর্তী সংসদের হাতে দেয়ার কথা বলে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। কিন্তু এই স্বপ্ন আর পূরণ হতে দেয়া হবেনা। জুলাই আকাঙ্খার বাস্তবায়ন করেই ফেব্রæয়ারীতেই নির্বাচন দিতে হবে।
মঙ্গলবার ( ১৪ অক্টোবর) বিকেলে নগরীতে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে পিআর পদ্ধতিকে জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত করে গণভোটের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, কতিপয় নেতা জনগণের অধিকারের কথা বলেন। আবার পিআর পদ্ধতি বুঝেন না, খায় না মাথায় দেন- জানেন না। অথচ পিআর পদ্ধতিতে প্রতিটি ভোটারের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সে তার ভোটের মূল্য দেখতে পায়। দেশে এখনো লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিটি স্তরে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো সর্বত্র বসে আছে। তারা নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে একটি গোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করছেন। কোন রকম নির্বাচন দিয়ে নিজেদের সেইফ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। আমাদের কথা স্পষ্ট নির্বাচন ফেব্রæয়ারীতেই হতে হবে। তবে এর আগে ৫ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় নগরীর শহীদ মিনারস্থ চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে মানববন্ধটি শুরু হয়ে নগরীর জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার হয়ে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট (কিনব্রিজের মুখ) পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। মানববন্ধনে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াতের বিভিন শাখার পৃথক ব্যানার হাতে নিয়ে হাজার হাজার জনশক্তি অংশ নেন। এছাড়া মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার শত শত মানুষ অংশ নেন।
সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, দাঁড়িপাল্লার গণজোয়ার দেখে বিএনপি ভয় পেয়ে গেছে। ভয়ের কিছু নাই। জনগণ আপনাদের ভোট দিলে নির্বাচনের আগে গণভোট নিয়ে এত আপত্তি কেন? জামায়াত ভোট, আন্দোলন ও গণভোটে আছে। নির্বাচনের আগেই গণভোট আগে দিতেই হবে। কারণ অবাধ ও সুষ্ট নির্বাচনের জন্যই পিআর পদ্ধতি ও জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি দরকার। আর এটি হলে অন্তর্র্বতী সরকারের কোমড় শক্ত হবে।
এদিকে কোর্টপয়েন্ট এলাকায় মহানগর সহকারী সেক্রেটারী জাহেদুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় মানববন্ধন চলাকালে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, জেলা সহকারী সেক্রেটারী নজরুল ইসলাম ও মহানগর সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা ইসলাম উদ্দিনসহ জেলা ও মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর সিলেট-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, জেলা সেক্রেটারী, সাবেক জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সিলেট-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জয়নাল আবেদীন, জেলা সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা মাসুক আহমদ ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগরী সভাপতি শাহীন আহমেদ।
জামায়াত, সিলেট, জুলাই সনদ, রাজনীতি, নির্বাচন, গণভোট, পিআর পদ্ধতি