ছবিঃ ছবিঃ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের শাল্লায় সরকারি ইজারাকৃত বিভিন্ন জলমহালে চলছে লুটপাটের মহোৎসব। কোনকিছু না বলেই এ নিয়ে বড় বড় তিনটি বিলের মাছ লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে বিলগুলোর প্রায় সাড়ে তিনকোটি টাকার মাছ লুটপাট হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।   

এদিকে, শত শত দুর্বৃত্তরা একসঙ্গে বিলে মাছ ধরতে ঝাপিয়ে পড়ায় লুটপাট ঠেকাতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এতে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইজারাদাররা। তবে পুলিশ বলছে, মাছ লুটপাটে হাজার হাজার মানুষ জড়িত থাকায় তারা লুটপাট ঠেকাতে পারছে না। অসহায় হয়ে পড়েন ইজারাদার ও অন্যান্য অংশীদারেরা। 

শনিবার (১মার্চ ) সকালে উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের জোয়ারিয়া বিল লুটপাট করে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। বিলটি যাত্রাপুর হিলিপ সমবায় সমিতি লিমিটেডের অধীনে ইজারা ছিল। এ ঘটনায় নিঃস্ব প্রায় বিলের ইজারাদার ও  যাত্রাপুর হিলিপ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি হিমাদ্রী সরকার। 

তিনি বলেন, 'বিলে বাঁশ-কাঠা দেওয়া, পাহারাদার রাখাসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আগামী বছর মাছ ধরার কথা ছিল কিন্তু জোর করে দুই দিন মাছ ধরে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি করা হয়েছে।'  

রাত পোহাতেই পরদিন রোববার সকালে লুটপাট হয় উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় আতনী (পাইল) বিল। এতেও প্রায় কোটি টাকার মাছ লুটপাট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এমনটিই জানায় আতনী বিলের কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে, গেল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ভোর ৬টায় উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের কাশীপুর লাইয়ার দিঘা গ্রুপের (সতোয়া) বিলসহ দুটি বিলের মাছ লুটপাটে নামে দুর্বৃত্তরা। এই জলমহালটি পাশ্ববর্তী দিরাই উপজেলার উত্তর জারলিয়া মৎসজীবি সমবায় সমিতির লিমিটেডের নামে ইজারা ছিল। লুটের ঘটনায় বিলের ইজরাদার  জলমহালটি লুটপাটের পেছনে উস্কানি ও ইন্ধনদাতা হিসেবে একজনকে দায়ী করেছেন। 

প্রজেশ লাল দাশ বলেন, 'আমার বিলটি লুটপাটের পেছনে দিরাই উপজেলার নোয়ারচর গ্রামের মোনায়েম খানের ইন্ধন রয়েছে। মোনাইম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়েছে। 

তিনি বলেন, ' এ ঘটনায় আমি জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। সরকারি বৈধ জলমহাল এভাবে লুটপাট হলে ভবিষ্যতে আর এসব বিল কেউ ইজারা নেবে না। এতে সরকারেরই ক্ষতি হবে। সরকার বছরের পর বছর রাজস্ব হারাবে।' 

এই বিলের আরেক অংশীদার অলিউর রহমান চৌধুরী ইমন বলেন,আমাদের বিলে কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম পবিত্র এই রমজান মাসে যারা আমাদের বিল লুটেছে ওই লুটেরাদের বিচার আল্লাহ করবে। লুটপাটকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন আপনাদের কি লাভ হয়েছে আমি জানিনা, হাজার হাজার মানুষ আমরা কয়েকজন মানুষের যে ক্ষতি করেছে তা অপূরনীয়। 

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জোয়ারিয়া বিলে মাছ ধরার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। লাইরা দীঘা জলমহালে হাজার হাজার লোক ভোরে মাছ ধরতে যায়। এসব বিল থানা থেকে অনেক দূরে, তাই পুলিশ যাওয়ার আগেই লোকজন চলে গিয়েছে বলে জানান তিনি। 

Single News Bottom

শেয়ার করুনঃ

অপরাধ-বিচার থেকে আরো পড়ুন

বিল, জলমহাল, লুটপাট, শাল্লা